জ্বরকে আমরা অসুখ বা রোগ ভাবলেও জ্বর আসলে অন্য কোনো একটি রোগের পূর্ব লক্ষণ। মূলত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে মানবদেহের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। আমাদের দেহে যখন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি থাকে, তখন কিছু নিয়ম মেনে ঔষধ সেবন করলে জ্বর ভালো হয়। সাধারন ভাবে আমাদের যে সকল বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে, নিচে সেগুলো বর্ননা করা হল।
শরীর মুছা বা গোসল করা
জ্বরে আক্রান্ত অবস্থায় আমরা গোসলের কথা চিন্তাও করতে পারি না। আমদের ধারনা হল এ সময় গোসল করা ঠিক হবে না। কিন্তু এটি ভ্রান্ত বা ভুল ধারনা। তবে জ্বর হলে অবশ্যই কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে।
কোন ক্রমেই বেশি ঠান্ডা পানিতে গোসল করা যাবেনা। ঠান্ডা পানির করনে দেহের রক্তজালিকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। জ্বর অবস্থায় ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার ফলে অনেক সময় শরীরে কাঁপুনি হতে পারে।
তবে গোসল করতেই হবে এমন নয়। দীর্ঘদিন ধরে জ্বর না হলে গোসলের তেমন প্রয়োজন নেই। এক্ষেত্রে গামছা ভিজিয়ে শরীর মুছে দেয়া সবচেয়ে উত্তম।
জলপট্টি বা তোয়ালে ভিজিয়ে মাথায় দেয়া
সাধারনত জ্বর বেশি হলে আমরা প্রথমিক চিকিৎসা হিসেবে গামছা বা তোয়ালে ভিজিয়ে মাথায় দিয়ে রাখি। একেই বলে জলপট্রি। জলপট্টি ৫ মিনিট পর পর ভিজিয়ে আনুন। যদি জ্বর খুব বেশি হয়ে যায় তবে ঔষধ সেবনের পাশাপাশি এটি প্রয়োগ করুন। এবং পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। অন্যথায় বরফ তোয়ালে দিয়ে পেচিয়ে দেয়া যেতে পারে। কিন্তু সকল ক্ষেত্রে বরফ দেয়া যাবে না।
পোশাক পরিবর্তন এবং খাদ্য
জ্বর হলে যথাসম্ভব তরল খাবার, যেগুলোতে পুষ্টি বিদ্যমান সেগুলো খেতে হবে। খাবার খেতে হবে নিয়মিত এবং খাবারের পাশাপাশি কুসুম গরম পানি পান করতে হবে। গরম পানিতে অল্প লবন দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এবং আদা দিয়ে প্রস্তুতকৃত চা পান করুন। জ্বর হলে সুতি জাতীয় পাতলা নরম কাপড় পড়তে হবে। দরজা-জানালা খুলে রাখবেন। এবং নিয়মিত কাপড় পরিবর্তন করে ধুয়া কাপড় পড়বেন।
ঘুম ও বিশ্রাম
ঘুম মানবদেহ সুস্থ রাখতে অপরিহার্য। আর অসুখের মধ্যে ঘুমালে শরীর পাতলা হয়। জ্বর কিংবা অন্যান্য অসুখ হলে বিশ্রামের পাশাপাশি প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন। দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে ঘুম সক্রিয় করে তুলে। শরীরের অবস্থা অনুযাযী একটু নড়াচড়া করুন।
পানি পান
বর্তমানে আমরা অনেকেই কাজে এত ব্যস্ত হয়ে থাকি যে সারাদিনে ১ লিটার এর বেশি পানি পান করা হয় না। কিন্তু আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধের জন্য পানি সবচেয়ে কার্যকরী। আর জ্বর হলে প্রায় সময় শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। জ্বর যত বেশি হয় শরীরে পানিশূন্যতার সম্ভবনা তত বেশি থাকে। জ্বরের সময় খাওয়ার রুচি কমে যায় এবং বমির ভাব হয়ে থাকে।
0 Comments